GreenworldLearning ওয়েবসাইট তৈরির প্রক্রিয়া
ওয়েবসাইট তৈরির প্রক্রিয়া জানার আগে আমাদের জানা উচিত আপনার একটি ওয়েবসাইট কেন প্রয়োজন।
ওয়েবসাইট সবথেকে বড় ভূমিকা রাখে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে।
ডিজিটাল মার্কেটিং কি?
ধরুন আপনি একটা কোম্পানিতে জব করেন, তারা কোন একটা প্রোডাক্ট বিক্রি করে, বা কোন দোকানদার সাধারণ মানুষের কাছে কোন পণ্য বিক্রি করে ,এই কাজগুলো হয় সরাসরি বা ফেস টু ফেস।
কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং এ মাধ্যমে আপনি ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে গ্রাহককে জানাতে পারবেন এবং গ্রাহক যদি নিতে ইচ্ছুক হয় সেটি তার কাছে বিক্রি করতে বা পৌছাতে সক্ষম হবেন। অনলাইন এর মাধ্যমে এভাবে মার্কেটিং করার পদ্ধতিটিকেই সাধারণত ডিজিটাল মার্কেটিং বলে।
ওয়েবসাইট কেন প্রয়োজন?
ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে কনটেন্ট রাইটিং করতে,কোন পন্য বা সেবা গ্রাহকদের নিকট পৌঁছাতে আমরা, ইউটিউব মার্কেটিং,ফেসবুক মার্কেটিং, এবং google এর মাধ্যমে মার্কেটিং করার জন্য আমাদের একটি ওয়েবসাইট প্রয়োজন হয় ।
শুধু টুলস ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরি করলেই হয় না তার আগে কিছু বিষয় জানা প্রয়োজন।
Ordinary It digital marketing course কোর্স করার মাধ্যমে এই ওয়েবসাইট প্রস্তুত করার পূর্ণাঙ্গ ধারনা পেয়েছি।
আজ সেটি আপনাদের বিস্তারিত জানাবো।
এই Greenworld Learning ওয়েবসাইট তৈরির প্রক্রিয়াটি বিভিন্ন ধাপে বিভক্ত। এখানে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হলো:
১. পরিকল্পনা (Planning)
*উদ্দেশ্য নির্ধারণ: সবার প্রথমে ওয়েবসাইটটির উদ্দেশ্য কি তা সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করুন। এটি একটি ব্যক্তিগত ব্লগ, ই-কমার্স সাইট, তথ্যভিত্তিক সাইট, বা কর্পোরেট ওয়েবসাইট হতে পারে।
*লক্ষ্য শ্রোতা/দর্শক: ওয়েবসাইটটি কার জন্য তৈরি হচ্ছে তা নির্ধারণ করুন, অর্থাৎ আপনি একটি বয়স চার্ট তৈরি করুন, কোন বয়সের মানুষেরা আপনার ওয়েবসাইটটি ভিউ করতে পারে অর্থাৎ কোন বয়সের মানুষের জন্য আপনি আপনার ওয়েবসাইট তৈরি করছেন এটি নির্ধারণ করুন। আপনার ওয়েবসাইটে কতটা ভিউ হবে সেটা অনুমান করতে এটি আপনাকে সাহায্য করবে ও কি ধরনের কন্টেন্ট এবং ফিচার আপনি যোগ করবেন সেটা বুঝতেও সাহায্য করবে ।
*বৈশিষ্ট্য এবং কার্যকারিতা: অর্থাৎ আপনি কি ধরনের ওয়েবসাইট বানাতে চাচ্ছেন,ওয়েবসাইটে কি কি ফিচার থাকবে যেমন কন্টাক্ট ফর্ম, ই-কমার্স, ব্লগ সেকশন, গ্যালারি ইত্যাদি।
২. ডোমেইন নাম এবং হোস্টিং নির্বাচন (Domain and Hosting)
ডোমেইন নাম নির্বাচন: একটি সহজে মনে রাখার মতো এবং প্রাসঙ্গিক ডোমেইন নাম নির্বাচন করুন। ডোমেইন নাম রেজিস্ট্রার যেমন GoDaddy, Namecheap থেকে কিনতে পারেন।
এক বছরের জন্য ডোমেইন কিনতে চাইলে সাধারণ ডোমেন নাম এর জন্য 10.28 ইউ এস ডলার বা সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা লাগতে পারে।
ডোমেন নাম ভিসা কার্ড মাস্টার কার্ড দিয়ে কিনতে পারবেন
হোস্টিং নির্বাচন: ওয়েবসাইট হোস্ট করার জন্য একটি নির্ভরযোগ্য হোস্টিং প্রোভাইডার নির্বাচন করুন।
Blogger.com থেকে আপনার আপনার ওয়েবসাইট অ্যাকাউন্ট খুললে হোস্টিং ফ্রি পাওয়া যাবে। অর্থাৎ এর জন্য কোন চার্জ প্রযোজ্য হবে না।
৩. ওয়েবসাইট তৈরি (Website create)
Blogger.com এ আসলে প্রথমে create a blog বা sign in button এ ক্লিক করার পর আপনার নির্ধারিত ডোমেইন নামটি দিয়ে একাউন্ট খোলার মাধ্যমে একটি ফ্রি ওয়েবসাইট খুলতে পারবেন। পরবর্তীতে Namecheap/GoDaddy থেকে কেনা ডোমেন নামটি আপনার ব্লগার ওয়েবসাইটের সাথে কানেক্ট করতে হবে, তাহলে আপনার ওয়েবসাইটটি সবাই দেখতে পাবে এবং আপনার ওয়েবসাইটটি এখন প্রস্তুত।
৪.থিম কাস্টমাইজেশন (Theme Customization)
এই ধাপে আপনার কাজ হবে সঠিক থিম নির্বাচন করা।
আপনি যে ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করতে চাচ্ছেন সেই ধরনের ভিত্তিতে একটি থিম নির্বাচন করুন ও সেটিকে থিম অপশনে গিয়ে সেটআপ করুন।
৫. কন্টেন্ট তৈরি (Content Creation)
লিখিত কন্টেন্ট: ওয়েবসাইটের জন্য প্রয়োজনীয় টেক্সট কন্টেন্ট যেমন ব্লগ পোস্ট, পেজ কন্টেন্ট, প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন ইত্যাদি তৈরি করুন।
ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট: ইমেজ, ভিডিও, এবং অন্যান্য মিডিয়া তৈরি করুন যা ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত হবে।
৬. লে আউট সাজানো(Arrange Layout )
থিম সেটআপ করার পর কয়েকটি পোস্ট লিখে সেটি পাবলিশ করুন। এরপর লে আউট অপশনে গিয়ে আপনার ওয়েবসাইটটি কিভাবে ভিউ করাতে চাচ্ছেন সেভাবে সাজান।
প্রতিদিন ওয়েবসাইটে একটি করে পোস্ট দেওয়ার চেষ্টা করুন। কোন সাইট থেকে কপি-পেস্ট করলে কিছুদিন পর আপনার ওয়েবসাইটটি ব্লক হয়ে যেতে পারে। তাই নিজে টাইপ করে লেখার চেষ্টা করুন।
৭. ডেভেলপমেন্ট (Development)
ফ্রন্টএন্ড ডেভেলপমেন্ট: HTML, CSS, এবং JavaScript ব্যবহার করে ওয়েবসাইটের ভিজ্যুয়াল এবং ইন্টারেকটিভ অংশ তৈরি করুন।
ব্যাকএন্ড ডেভেলপমেন্ট: সার্ভার সাইড লজিক, ডেটাবেস ম্যানেজমেন্ট, এবং অ্যাপ্লিকেশন লজিক তৈরি করুন। এটি PHP, Python, Ruby, Node.js ইত্যাদি ভাষায় করা যেতে পারে।
কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS): যদি আপনি একটি CMS ব্যবহার করেন, যেমন ওয়ার্ডপ্রেস, তাহলে থিম এবং প্লাগইন ইনস্টল এবং কনফিগার করুন।
৮. টেস্টিং (Testing)
ফাংশনাল টেস্টিং: ওয়েবসাইটের সব ফিচার এবং কার্যকরিতা পরীক্ষা করুন।
ব্রাউজার এবং ডিভাইস কম্প্যাটিবিলিটি টেস্টিং: বিভিন্ন ব্রাউজার এবং ডিভাইসে ওয়েবসাইটটি সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা পরীক্ষা করুন।
পারফরম্যান্স টেস্টিং: ওয়েবসাইটের লোড টাইম এবং পারফরম্যান্স পরীক্ষা করুন।
৯. ডেপ্লয়মেন্ট (Deployment)
ফাইল আপলোড: সমস্ত ওয়েবসাইট ফাইল এবং ডাটাবেস হোস্টিং সার্ভারে আপলোড করুন।
ডোমেইন সেটআপ: ডোমেইন নাম সার্ভার (DNS) কনফিগার করুন যাতে ডোমেইনটি হোস্টিং সার্ভারের সাথে সংযুক্ত হয়।
লাইভ করার প্রস্তুতি: সবকিছু ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা নিশ্চিত করে ওয়েবসাইটটি লাইভ করুন।
১০. রক্ষণাবেক্ষণ এবং আপডেট (Maintenance and Updates)
নিয়মিত আপডেট: ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট এবং সফটওয়্যার নিয়মিত আপডেট করুন।
ব্যাকআপ: নিয়মিত ওয়েবসাইটের ব্যাকআপ নিন।
মনিটরিং: ওয়েবসাইটের পারফরম্যান্স এবং সিকিউরিটি মনিটর করুন।
এই ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি একটি সম্পূর্ণ কার্যকরী এবং প্রফেশনাল ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন।