ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
বর্তমানে ভিটামিন ই ক্যাপসুল রূপচর্চার জগতে অতুলনীয় একটি উপাদান। ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম অনেক সহজ । ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর গুনাগুন মুখে ব্যবহার, চুলে ব্যবহার ও খাওয়ার মাধ্যমে আমরা নিজেদের মধ্যে পেতে পারি।
usage of vitamin e capsule for face |
(বি:দ্র:এই ব্লগে উল্লিখিত সমস্ত নিয়ম বা পদ্ধতি শুধু পরামর্শ স্বরুপ। আপনার ত্বকে যদি কোন বিশেষ সমস্যা থাকে, এ পদ্ধতি ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন।)
এই ব্লগে যে যে বিষয় জানতে পারবেন
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল প্রথমবার ব্যবহারের পূর্বে করণীয়
- ভিটামিন ই ব্যবহারের উত্তম সময়
- ভিটামিন ই ক্যাপসুলের ব্যবহার
- গোলাপ জল ও ভিটামিন ই এর ব্যবহার
- অ্যালোভেরা জেল ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ব্যবহার
- দারুচিনি,মধু ও ভিটামিন ই এর ব্যবহার
- দুধ, মধু ও ভিটামিন ই এর ব্যবহার
- অ্যালোভেরা, টকদই, কলা ও ভিটামিন ই এর ব্যবহার
- পেঁপে মধু ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ব্যবহার
ভিটামিন ই ক্যাপসুল প্রথমবার ব্যবহারের পূর্বে করণীয়
ভিটামিন ই ক্যাপসুল প্রথমবার ব্যবহার পূর্বে অবশ্যই ত্বকের উপরে ব্যবহার না করে
হাতে বা গলার পাশে লাগিয়ে ২৪ ঘন্টা রেখে পরীক্ষা করবেন যে আপনার কোন সমস্যা,
চুলকানি বা কোন জ্বালাপোড়া,দাগ বের হচ্ছে কিনা। যদি কোন সমস্যা না হয়ে থাকে
তাহলে বলা যায় আপনি নিশ্চিন্তে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহার করতে
পারেন তবে অবশ্যই ত্বকের অবস্থা বুঝে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। আরো একটি
বিষয় হল ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই সেটির মেয়াদ চেক করে
নিবেন।মেয়াদ উত্তীর্ণ ভিটামিন ই ক্যাপসুল বাসায় ফেলে রাখবেন না। ও
বিশেষজ্ঞদের মতে সর্বোচ্চ 1000 গ্রাম এর অধিক ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহার
না করাই উত্তম।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের উত্তম সময়
ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের উত্তম সময় হলো রাতে ঘুমানোর আগে, ঘুমোনোর আগে ত্বক ভালো একটি ক্লিনজিং ফেসওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করে তারপর ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহার করবেন এতে ফলাফল দ্বিগুণ ভালো পাবেন। এতে করে সারারাত ভিটামিন ই আপনার ত্বকের গভীরে যেয়ে ত্বককে নরম ও প্রাণবন্ত করে তোলার কাজ সুন্দর ভাবে করবে।কখনোই ময়লা ত্বকে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করবেন না । এতে করে ত্বকে থাকা ময়লা ত্বকের একদম ভিতরে ঢুকে ত্বকের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। তাই অবশ্যই মনে রাখবেন, রাতে ঘুমানোর পূর্ব মুহূর্ত হল ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের উত্তম সময়।
এবার আসুন জেনে নিয়ে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের সাতটি নিয়ম বা ঘরোয়া পদ্ধতি।
১. ভিটামিন ই ক্যাপসুলের ব্যবহার
উপকরণ ও পরিমাণযাদের পিম্পলের সমস্যা আছে তারা পিম্পল দূর করার জন্য দুইটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর তেল বা এক্সট্র্যাক্ট বের করে মুখের যে স্থানে পিম্পল আছে সেখানে সারারাত লাগিয়ে রেখে সকালে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। যতদিন ভালো না হয় ততদিন এটি করতে হবে।
তবে যদি দীর্ঘ সময় মনে হয় আপনার হরমোনাল সমস্যার কারণে পিম্পল ভালো হচ্ছে না তাহলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে,হরমোনের সমস্যা থাকলে শুধু ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে লাগিয়ে পিম্পল দূর করা সম্ভব নয়।
২. গোলাপ জল ও ভিটামিন ই এর ব্যবহার
উপকরণ ও পরিমাণ
ভিটামিন ই ক্যাপসুল - ১টি
আজকাল সব কমবেশি সবার বাসাতেই গোলাপজল থাকে। একটা ই ক্যাপসুল এর ভেতরের
এক্সট্র্যাক্ট সাথে ২ চা চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করুন ও ১৫ থেকে
২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি আপনার মুখে প্রাথমিকভাবে নরম ও কোমল ত্বকের
অনুভূতি পেতে সাহায্য করবে।
ভিটামিন ই সাধারণত সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করার থেকে কোন কিছুর সাথে
মিশিয়ে ব্যবহার করা ভালো।ভিটামিন ই তে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোষ
মেরামতে দ্রুত কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
৩. অ্যালোভেরা জেল ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ব্যবহার
উপকরণ ও পরিমাণঅ্যালোভেরা জেল - এক টেবিল চামচ
ভিটামিন ই ক্যাপসুল - দুইটি
সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন এই প্যাকটি ব্যবহার করুন।অ্যালোভেরা জেল ত্বকের গভীরে গিয়ে ত্বক মেরামতের সাহায্য করে ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল হয়ে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে ড্যামেজ হওয়া থেকে রক্ষা করে। তাই মুখের কালচে ভাব দূর করতে এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।
৪. দারুচিনি,মধু ও ভিটামিন ই এর ব্যবহার
খাটি মধু - এক চা চামচ
ভিটামিন ই ক্যাপসুল - একটা
ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ভেতরে থাকা এক্সট্রাক্ট বা তেল এর সাথে দারুচিনি ও খাঁটি মধু একসাথে মিশিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে আপনার স্কিনে ব্যবহার করুন ও শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এরপর ভালো একটি মশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
এতেকরে যাদের ত্বক কুঁচকে যাওয়া বা বলিরেখা ও পিম্পেলের সমস্যা আছে তারা উপকার পাবেন। ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহে একদিন অথবা দুই দিন ব্যবহার করুন।
৫.দুধ, মধু ও ভিটামিন ই এর ব্যবহার
দুধ - দুই টেবিল চামচ
মধু - ২ টেবিল চামচ
সমস্ত উপকরণ একসাথে মিশিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে আপনার স্কিনে ব্যবহার করুন ও শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। শুষ্ক ত্বকের জন্য এটি বিশেষ কার্যকরী। এই প্যাকটি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করুন। দুধে থাকা ল্যাকটিক এসিড ত্বকে পুষ্টি যোগায়। মধু ত্বক নরম করে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ত্বকের শুষ্কতা দূর করে।
৬. অ্যালোভেরা, টকদই, কলা ও ভিটামিন ই এর ব্যবহার
টকদই - এক টেবিল চামচ
কলা - একটি
ভিটামিন ই ক্যাপসুল - একটি
সমস্ত উপকরণ একসাথে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে মুখে ব্যবহার করুন ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই ফেসপ্যাক আপনার ত্বককে রাখবে সুস্থ ও প্রাণবন্ত ।
৭. পেঁপে মধু ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ব্যবহার
মধু - এক চা চামচ
ভিটামিন ই ক্যাপসুল - তিন থেকে চারটি
সমস্ত উপকরণ একসাথে মিশিয়ে মুখে ও ঘাড়ে লাগান। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আপনার ত্বক নির্জীব হয়ে পড়েছে? নির্জীব ত্বক গ্লোয়িং করতে এই ফেসপ্যাক টি ব্যবহার করতে পারেন।
পেঁপেতে থাকা প্যাপেইন , মধুর মশ্চারাইজিং ক্ষমতা এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুলের ত্বকের কোষ মেরামতের ক্ষমতা সব পাবেন একট ফেসপ্যাকে। ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করুন।
আরো পড়ুন ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে চুলের যত্ন
মন্তব্য
বাইরে থেকে ত্বকের যত্ন করার পাশাপাশি আপনার ঘুম ও পানি পান, এ বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে এগুলো পর্যাপ্ত হচ্ছে কিনা এই দিকে খেয়াল রাখবেন। এছাড়া মানসিক অবস্থাও আমাদের ত্বকের উপর প্রভাব ফেলে। আপনি যদি দীর্ঘদিন যাবত হতাশায় ভোগেন এটির নিতিবাচক প্রভাব আপনার ত্বকে পড়বে,তাই সব সময় ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করুন ও নিজের যত্ন নিন। যদি এই ঘরোয়া পদ্ধতি দীর্ঘদিন ব্যবহার করেও পরিবর্তন না হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।